November 21, 2024, 12:40 pm
ববি প্রতিনিধি ॥ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ছাদে বালতিতে বৃষ্টির পানি ধরে পানি সংকটের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। শুক্রবার (৪ আগস্ট) দুপুরে বাথরুমে গোসলের পানি না পেয়ে শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে ছাদে উঠে এ প্রতিবাদ জানান। জানা গেছে, ওই হলে দীর্ঘদিন ধরে চলছে পানির সংকট। বিষয়টি হলের প্রভোস্টসহ সংশ্লিষ্টদের লিখিত ও মৌখিকভাবে জানালেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এতে প্রতিদিন গোসল থেকে শুরু করে কাপড় ধোয়া, খাবার ও টয়লেট ব্যবহারে মারাত্মক সমস্যা পড়তে হচ্ছে। আবাসিক শিক্ষার্থী সমাজবিজ্ঞানের সৈয়দ মুস্তাকিম ও ব্যবস্থাপনার আরাফাত হোসেন বলেন, এ সমস্যা একদিনের নয়, দীর্ঘদিনের। প্রতিদিন গোসল করতে গেলে বেশিরভাগ আবাসিক শিক্ষার্থীদের গোসল ছাড়াই বের হয়ে ক্লাসে যেতে হয়। এ জন্য হল সংলগ্ন পুকুর সংস্কারের জন্য বলা হলেও তাও কোনও ভ্রুক্ষেপ করছে না কর্তৃপক্ষ। হলের ছাদে থাকা রিজার্ভ ট্যাঙ্কিতে যে পরিমাণ পানি ওঠানো হয় তা অর্ধেক শিক্ষার্থীও ব্যবহার করতে পারে না।
তারা বলেন, এ কারণে বেশিরভাগ সময় পানি কিনে এনে তা ব্যবহার করতে হচ্ছে। কিন্তু তা বেশি দিন সম্ভব হয়নি। পানির সংকট থাকায় প্রতিদিন সকালে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে একরকম প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কার আগে কে গোসল ও টয়লেট সারবে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্বও সৃষ্টি হয়। ইংরেজি বিভাগের ইমন মিয়া ও ফিন্যান্সের আবুল কাসেম জিহাদ বলেন, হোস্টেলে পানি সংকট থাকায় মাঝে মধ্যে নগরীতে থাকা আত্মীয়স্বজন এবং সহপাঠী যারা বাসায় নিয়ে থাকে তাদের বাসায় গিয়ে গোসল করতে হয়। একইসঙ্গে প্রতি সপ্তাহের নোংরা কাপড় সেখান থেকেই ধোয়া হয়। এভাবে কতদিন চলা যায়? ওই সব স্থানে যেতে এখন লজ্জা করে। তারপরও সেই লজ্জা ভেঙে একদিন সহপাঠী এবং একদিন আত্মীয় এভাবে চলছে। সমাজ বিজ্ঞানের উজ্জল খান বলেন, গোসল না করে থাকলাম। কিন্তু টয়লেটে গেলে পানি লাগবেই।
সেখানে গিয়েও কোনও পানি পাওয়া যায় না। এ কারণে বিকল্প হিসেবে টিস্যু নিয়ে যেতে হয়। এভাবে অনেক শিক্ষার্থী টয়লেটে গিয়ে এরপর পানি না পেয়ে চিৎকার দিয়ে টিস্যু দিতে বলে। এখন এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে লেখাপড়ার চেয়ে পানি নিয়ে বেশি চিন্তায় পড়তে হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আকুতি জানাচ্ছি, যেভাবে পারেন এ সংকট দূর করেন। পানির সংকট আমাদের লেখাপড়ার ওপরও প্রভাব ফেলছে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু হলের প্রভোস্ট ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন বলেন, হলের ধারণক্ষমতা আড়াইশ কিন্তু শিক্ষার্থী থাকছে দ্বিগুণেরও বেশি। আর রিজার্ভ ট্যাঙ্কি করা হয়েছে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী। এ কারণে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া ছুটির দিন শুক্রবার শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে গোসল করতে যাওয়ায় এ সংকট আরও বেশি দেখা দেয়। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সেন্ট্রাল পানির কোনও ব্যবস্থা থাকলে এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না। তবে পানির সংকট নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। যত দ্রুত বাজেট আসবে তত দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে।
Leave a Reply